প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষুঃ
একজন, দুজন করে কক্সবাজার জেলাতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৭০ জন ছাড়িয়ে গেল! বর্তমান কক্সবাজার জেলার আট উপজেলার কোনো উপজেলা করোনা মুক্ত নয়। কম বেশি সব উপজেলায় করোনা হানা দিতে সক্ষম হয়েছে। এ পর্যন্ত আবার ৩০ জনের অধিক সুস্থ হওয়ার দৃষ্টান্তও আছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, চকরিয়াতে ৬০ জন, কক্সবাজার সদরে ৪১ জন, উখিয়াতে ২২ জন, পেবুয়াতে ২২ জন, মহেশখালীতে ১২ জন, টেকনাফে ৭ জন, রামুতে ৪ জন এবং কুতুবদিয়াতে ২ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে।

এরপরও পরিস্থিতি মোটামোটিভাবে এখনও নিয়ন্ত্রণে ছিল বলা যায়।

শুরু থেকেই করোনা নিয়ে রোহিঙ্গ শিবির গুলো সবথেকে আশংকার এবং দুঃচিন্তার একটা বড় ক্ষেত্র ছিল। কিন্তু শেষ র্পন্ত করোনা রোহিঙ্গা শিবিরে হানা দিতে সক্ষম হয়েছে। এখন সেখানে চার জন মত আক্রান্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসন এবার সংকটের নতুন রূপ দেখার সমূহ আশংকা রয়েছে। কিন্তু প্রার্থনা সতত এটাই যে সেরকম কিছু যাতে না হয়।

গাদাগাদি করে দশ লক্ষাধিক মানুষ একই এলাকায় থাকা, তার উপর অসচেতন জীবন যাপনে অভ্যস্ত, করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা কিংবা মানানো যেখানে খুব সহজ কাজ নয় তেমন একটি ঝৃঁকিপূর্ণ স্থানে করোনা থাবা বসানোর সম্ভাবনা সবথেকে বেশি ছিল। করোনা এতদিন ধরে সেখানে হানা দিতে না পারাটা ছিল অত্যন্ত স্বস্থির এবং পরম পাওয়া। কিন্তু শেষ রক্ষা তো হলনা।

জেলা প্রশাসন বিষয়টিকে যাতে কোন যুক্তিতেই, কোনো ভরসাতেই, কোনো অজুহাতেই হালকা করে না নেন এই প্রত্যাশা আমাদের সকলের।

এমতাবস্থায় জেলার সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, সমাজকর্মী, রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি সবাইকে জেলা প্রশাসনের পাশে অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে আরো বেশি থেকে এই সংকট মোকাবেলা করতে হবে।

ত্রাণ কে কত বেশি পেল, বেশি নিল, বেশি দিল এই হিসাব নিকাশের চেয়েও অতি গুরুত্বপূর্ণ হল সবাইকে নিরাপদ রাখা। বিবেচ্য বিষয় হল, ত্রাণগুলো কিন্তু জলে ফেলে দেওয়া হচ্ছে না। এই সংকটে সামান্য খাদ্যসামগ্রীকে কেন্দ্র করে কেউ কারো বিরুদ্ধাচারে মেতে উঠার সময় নয়। আমি কাউকে খোচাও দিচ্ছি না কিন্তু একটু নাড়িয়ে দিতে চাই যে এই দুঃসময়ে আসলে আমাদের কাছে কোনটা বেশি অর্থবহ এবং গুরুত্বপূর্ণ।

প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু
সভাপতি, কক্সবাজার জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদ, সম্পাদক, আমাদের রামু।